আধুনিকায়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে
বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে পদক্ষেপ
বাংলাদেশ সরকার বিমান বাহিনী আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে চীনের তৈরি ১২টি জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস গত মার্চে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন।
চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে থাকা প্রতিনিধিদলের দুই সদস্যের বরাত দিয়ে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ যুদ্ধবিমান কেনার ব্যাপারে ইতোমধ্যেই প্রাথমিক আলোচনা শুরু করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা ২৬ মার্চ চার দিনের সরকারি সফরে চীন যান। ওই সময় তিস্তা প্রকল্পে চীনের সহায়তা, একাধিক যুদ্ধবিমান ক্রয়, এবং বাংলাদেশ-কুনমিং বন্দর সংযোগ নিয়ে দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আলোচনা হয়।
নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানায়, বেইজিংয়ের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আধুনিকায়নের পরিকল্পনা তুলে ধরেন এবং চীনের কাছ থেকে ১২টি জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। চীনের প্রেসিডেন্ট এতে ইতিবাচক সাড়া দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়টি আলোচনা করেছিলেন।
কূটনৈতিক সূত্রে আরও জানা যায়, সফরের আগেই বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা চলছিল। বেইজিং বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বর্তমানে এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার অগ্রগতি চলছে।
জে-১০সি যুদ্ধবিমান
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের তথ্যমতে, চীনের জে-১০সি যুদ্ধবিমানকে “ভিগোরাস ড্রাগন” নামেও ডাকা হয়। এটি চতুর্থ প্রজন্মের বহুমুখী যুদ্ধবিমান (MRCA), যা আকাশ থেকে আকাশ, আকাশ থেকে ভূমি এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধসহ নানা ধরনের সামরিক অভিযানে সক্ষম।
এই যুদ্ধবিমান কেনা হলে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। তবে একই সঙ্গে এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জও তৈরি করতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
মেজর জেনারেল (অব.) এএনএম মুনিরুজ্জামান, সভাপতি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (BIPSS), বলেন, “জে-১০সি যুদ্ধবিমান ক্রয় বাংলাদেশের সামরিক শক্তি বাড়াবে। তবে এর ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবও বিবেচনা করতে হবে।”